Posts

Showing posts from May, 2020

রিভিউঃ পরিবর্তনে অপরিবর্তনীয় - মুজতবা আলী

Image
View on Goodreads ফরাসীতে একটা প্রবাদ আছে - 'প্লু সা শ্লাজ, প্লু সে লা ম্যাম শোজ' অর্থ্যাৎ যতই সে নিজেকে বদলায়, ততই তার মূল রুপ একই থাকে। মুজতবা আলী এরই বাংলা করেছেন 'পরিবর্তনে অপরিবর্তনীয়'। স্বাধীনতার পর মুজতবা আলী বাংলাদেশে চলে আসেন। সেই সময়েই সামরিক ক্যু'র মাধ্যমে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রি দাউদ খান। একে ঘিরেই লেখকের দৃষ্টিতে তৎকালীন বিশ্বের চার পরাশক্তি রাশিয়া, আমেরিকা, চীন আর জায়োনিজমের আধিপত্যবাদী পক্ষ-বিপক্ষ গ্রহণের বয়ান দিয়েছেন আলী সাহেব। প্রসঙ্গক্রমে এসেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিকসনের ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির ঘরের-বাইরের গল্প। সাথে তার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে পনের বছর বয়সে জার্মানি থেকে আমেরিকা প্রবাসী হাইনরিষ কিসিঙ্গার তথা হেনরি কিসিঞ্জারের গল্প। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ যার কাছে ছিল পাকিস্তানের ঘরোয়া ব্যাপার, অন্য দেশের ঘরোয়া বিষয় তার কাছে কেন আন্তর্জাতিক উদ্বেগের বিষয় হয়ে ওঠে তার বিশ্লেষণের প্রয়াস পেয়েছেন লেখক। আফগানিস্তানের ক্ষমতার পালাবদল সূত্রে পাকিস্তানের ভুট্টো আর ইরানের শাহের প্রসঙ...

অসভ্য নিরবতা

স্যামসাং এর একটা পুরানকালের ময়লা সাদা হেডফোনে সন্দীপের কন্ঠে 'নীল সাগরে' শুনতে শুনতে দক্ষিণের খোলা নীল আকাশের দিকে তাকায়া ডুব দেই স্মৃতির অতলে। ক্ষণে ক্ষণে বৈশাখী হাওয়ার ঝাপটা কাতরতা বাড়ায়া দিয়া যায় । অসভ্য নিরবতায় অভ্যস্ত হয়া গেছি কয়দিনে। এর মাঝেই হুট করে বেজে ওঠা সাইরেন অসহ্য লাগে। অসহ্য লাগে ছ্যাত করে ওঠা বিজলি; বছর কয়েক আগের চারুকলার এক সন্ধ্যার ঝাপসা ছবিটা হঠাৎ পরিস্কার হয়া ওঠে বইলা। তবু ঠায় বইসা থাকি। পশ্চিমে হারায়া যাওয়া চান্দের খোঁজে? ঝড় থাইমা যাওনের আশায়? জানিনা আসলে। অসহায় গাংচিলের ডানার আওয়াজ পাও নাকি? পাওনা কি? #করোনার দিনগুলি ১১ মে, ২০২০

নিখিলেশ স্যার স্মরণে

রাত জাগাটা অভ্যাসে পরিণত হয় কলেজের ফার্স্ট ইয়ারের শেষের দিকে। এর আগেও রাত জাগতাম না তা নয়। একাবারে নিয়ম করে রাত জাগার শুরু তখন আরকি। সারারাত নির্ঘুম কাটিয়ে সকালের শিফটের ক্লাস শেষে ঘুমোতে যেতাম। নির্ঘুম রাত কাটিয়ে আপ্যায়নে নাস্তাটা করে উস্কোখুস্কো চুলে ইষৎ লাল চোখে ক্লাসে যাওয়া ততদিনে অভ্যাসে দাড়িয়েছে। এক গুরু জহরলাল স্যারের ক্লাস ছাড়া অন্যান্য ক্লাসে স্যারেরা ওপেন ফ্লোরে কোন প্রশ্ন ছুড়ে দিলে স্বেচ্ছায় সেসবের উত্তর দেওয়ার পথ মাড়ানো তো দূরে থাক, স্যার আমার দিকে ইঙ্গিত করে দাঁড়াতে বললেও আসেপাশে বা সামনে-পিছনে তাকিয়ে স্যার যে আমাকে ডেকেছেন সেটা না বোঝার ভান করতাম। ক্লাস তো আর আরামবাগের আড্ডা না যে ধাপ্পা মেরে চালিয়ে দেওয়া যায়। সবসময় যে বেঁচে যেতাম তা নয়। মাঝেমাঝেই গুরুর অলঙ্ঘনীয় আদেশে কিছু সময় দাঁড়িয়ে বাক্যবাণ হজম করতে করতে মুফতে প্রাপ্ত নীতিকথাগুলো ঝুলিতে ভরতাম। তো এমনই একদিন, নিখিলেশ স্যারের বাংলা ক্লাস। স্যারের ক্লাস ভালোই লাগত। সেদিন কার মুখ স্বপ্নে দেখে ঘুম ভেঙেছিল জানিনা; ক্লাস শুরুর কিছুক্ষণ পরেই স্যার সোজা আমার দিকে তাকিয়ে ডাকলেন 'দাঁড়াও মিয়া'। এই রে- গেছে একেবারে। কোনভাব...