Posts

Showing posts with the label Poems

I Don't Belong To This City

একদিন শেষরাতে চোখেচোখ, মানবীর ছলনা ছিলনা দৃষ্টিতে, আমিও টুপ করে প্রেমে পড়ে গেলাম। হ্যাঁ, একদা এই শহরের সোডিয়াম আলোর প্রেমে পড়েছিলাম। যার অলি-গলি-রাজপথের দূর্বার আকর্ষণে হাজারো রাত কাটিয়ে দিয়েছি পথের বাঁকে নির্ঘুম সেইসব রাত! কি পূর্নিমা- কি অমাবস্যায় অভিজ্ঞ প্রেমিকের মতো শহরের খাঁজে-খাঁজে লুকোনো গোপন ঐশ্বর্য আর স্ফীত সব অভিজাত দালান নিংড়ে পান করেছি শহরের রুপসুধা। যখন ছুঁচোদৌড় আর রাজ্যের ব্যস্ততা শেষে লোহিত-চক্ষু শহর মধ্যরাতে খুলে দিত যৌবনের বান, কি উষ্ণ! কি উদাত্ত সেই আহবান! তারপর? শহরের সংযম ভেঙ্গে চুরমার করে দিল পুঁজিবাদের চাকচিক্য, একদিন ঝকঝকে ফ্লুরোসেন্ট আলোর কাছে সর্বস্ব সমর্পন করল শহর- আমার মতো হাজারো প্রেমিকের বুকে ছুরিকাঘাত করে, এ যেন আরেক ছলনাময়ী; যার শরীর জুড়ে এলইডি ব্যানারের ক্ষত আর পুরোনো গোটা তিনেক সোডিয়াম - কলঙ্কের দাগ। শহরের রাতগুলো এখনো নির্ঘুম কাটে, শুধু ভাবনা আসে মনে, না আমি এ শহরের কেও- না এ শহর আমার! আর মধ্যরাতে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে- "I don't belong to this city!" ১৫/১০/২০১৭ শাহবাগ, ঢাকা

অনুভূতির শব্দায়ন

মাত্র বছর কয়েক পরেই এইসব ঘুমহীন রাতের উন্মাদনা ক্লান্তি ভেজা এক শহুরে দুপুরের আড়মোড়া ভাঙা দীর্ঘশ্বাসে বেঁচে থাকবে বড়জোর! অথচ এখানে কি নিদারুণ উল্লাস! শব্দের পরে শব্দ, লাইনের পরে লাইন; ভাব,আবেগ,ইতিহাস আর অনাগত - গলগল করে ঝরে পরে সমানুপাতে; বাক্যের ভীড়ে রাত বাড়ে, ভাসে ভীড়-সঙ্কুল- সময়ের স্রোতে হারিয়ে যাওয়ার আকুল আকুতি। নীল-সাদার ক্যানভাসে একেকটা জীবন্ত গল্প; 'অনুভূতির শব্দায়ন ' - বলি আমি। ২৭/০৬/২০১৭

জন্মদিন

যদি ভাগ্যবিধাতা রোজনামচার ছলে, দু'দণ্ড ভেবে এক সকালে খচখচ করে লিখে ফেলত কয়েক ছত্র কবিতা- তোমার ভাগ্য খাতায়; আর জ্বলজ্বল করে মহাকাল ধরে জেগে থাকত ছত্র কয়েক সেই দিনটার পাতায়- যেদিন ছিল তোমার জন্মদিন! ২৬/০৬/২০১৭

প্রতিধ্বনি

আমি শুকিয়ে যাব খরখরে তপ্ত রোদে যেমন সবুজ কচি পাতাগুলো কুকড়ে যায় আর হঠাৎ এক দমকা হাওয়ায় ঝড়ে পরে ঠিক তেমনি অকালেই হয়তো ঝরে যাব একদিন! তখন সব নোনা স্মৃতিতে আমাকে স্মরতে এসো না কক্ষনো না - চুপসানো বেলুনের মত কুড়ে খাওয়া স্মৃতিতে আমার অস্পষ্ট মুখ চোখে ভাসবে, খবরদার আমায় ডেকনা নামধরে। ঘুনে ধরা কাঠের মত যখন সর্বগ্রাসী বিষাদ আমার সবটুকু গ্রাস করছিল ভাইরাসের মত তখন কেরোসিন হয়ে এগিয়ে আসনি বলে আমার চিতার আগুনে ঘি ঢালার অধিকারও হারিয়েছ! পরজন্মে হয়তো ফিরে আসব হতে পারে যীশুর মতো প্রত্যাবর্তন অবিশ্বাসী চোখের চাহনী দেখতে চাইনা আর বিশ্বাসের গ্রিডে ধ্বস নামলেও অবিশ্বাসের ছায়া মাড়িওনা অবেলায় ঝড়ে যাওয়ার আগেই মিনতি করছি শোন - কান পাতলেই শুনতে পাবে ধুসর পাতার মর্মর ধ্বনি!

অপ্রকাশিত

মাঝরাতে সত্যমিথ্যার মিশেল, আস্তে আস্তে মিথ্যার বিচ্যুতি- আর শেষরাতে নিরেট সত্যকাহনে জীবনের গল্পগুলো অক্ষরে রূপ পায় নীলক্ষেতে কেনা প্যাডের শুভ্র পাতায় কালো কালির হিজিবিজি দাগে। ছেলেটা লিখেই চলে ভোর অব্দি, তারপর রক্তবর্ণ ঢুলুঢুলু চোখে পড়তে থাকে, আস্তে আস্তে পান্ডুলিপিটা ভরে যায় ঘিজিমিজি দাগে, দুমড়ানো-মুচড়ানো পেজগুলোর শেষ ঠিকানা সেই ময়লার ঝুড়ি। গল্পগুলো অপ্রকাশিতই থেকে যায়; কিছু গল্প বলি বলি করেও বলা হয়না বাকিগুলো সবার কাছে বলা যায়না...

শুধুই জবাবদিহিতা

এই যে হাজারো মুহূর্ত ইন্দ্রিয়ের অপব্যবহারে অবহেলায় কাটিয়ে দিচ্ছি কখনও জিজ্ঞেস করেছ - কেন? কেন ঘন্টার পর ঘন্টা কানে হেডফোন গুঁজে কখনও একমনে কখনওবা আনমনে সুরের মাঝে হারিয়ে গেছি? প্রতিটা স্পন্দন আমি অনুভব করতে চেয়েছি। কেনইবা হাজারো মানুষের ভীড়ে এর-ওর মুখপানে তাকিয়ে বিব্রত করেছি শতজনকে, খুঁজেছি লুকানো অনুভূতিগুলোকে। টং দোকানের জমাট আড্ডায় বকবক করেছি যুক্তি-অযুক্তির সমাবর্তনে মুখে ফেনা তুলেছি সে শুধুই নিজেকে ব্যাখ্যা করার ব্যর্থ প্রয়াসে। আত্মপক্ষ সমর্থনে নয় - স্বতঃস্ফূর্ত এ কথাগুলো শুধুই জবাবদিহিতা মস্তিষ্কের কাছে হৃদয়ের, হৃদয়ের কাছে মস্তিষ্কের... [উৎসর্গ : 'হলেও হতে পারত' এক বন্ধুকে। তখন বলেছিলাম, এখন আর বলছিনা :D ]

অনুকাব্য - টিপ

তোমার শ্যামলা কপালে একপাটি টিপ মনে করিয়ে দেয়- রাতের আকাশের রুপালি চাঁদের কথা। বিমোহিত হয়ে চেয়ে থাকি- টলটলে ঐ দুচোখ পানে; যেন কাজলা দীঘির গভীর জলে ডুব দিয়েছি।

গণ? তন্ত্র??

উত্তপ্ত কোলাহলে ক্লান্ত নগরীর কোন এক ঘুপচি গলিতে মুক্তি পেল কে কবিতা-ছবিতে সাদাকালোয় তার হিসেব রাখেনা কেও। মহানগরীর বিকট দালান স্বমূর্তিতে দণ্ডায়মান; গণতন্ত্রের বিধান রচিত হয় যেখানে। জনতার পেতে রাখা কাঠের সিংহাসনে- কে এল-গেল, কিকরে বা সব হলো কেও তোলেনা প্রশ্ন কোন। কবিতাওয়ালা? ছবিতাওয়ালা?? গদি দখলের কুতকুত খেলায় হেলায় প্রাণটা হারায় 'ক্ষমতার উৎস ' ক্ষ্যাত সাধারণ মানুষ; হ্যা- সেই তো ক্ষমতার উৎস!

ল্যাম্পপোস্ট

মাঝরাতে প্রচন্ড নিঃসঙ্গতায় ভোগা ছেলেটা যখন উদ্দেশহীন প্রশস্ত রাজপথে গুটি গুটি পায়ে হাটতে থাকে অজানার পথে নিষ্প্রাণ শহরে চাপা আর্তনাদ ইথারেই ভেসে বেড়ায় চামড়ার কানে কাঁপন ধরানোর তীব্রতা তার নেই বলে একপেয়ে ল্যাম্পপোস্টগুলোই তখন একমাত্র শ্রোতা নি:স্বার্থে সঙ্গ দিয়ে যায় রাতভর - প্রতিদিন ছেলেটা প্রচন্ড রকম সুখী- ঐ ল্যাম্পপোস্টগুলোকে সঙ্গী হিসেবে পেয়ে সে জানে, তার ব্যাথায় কেও সমব্যাথিত হোক বা নাই হোক, তার জন্যে কেও অশ্রুবিসর্জন করুক বা নাইই করুক- ল্যাম্পপোস্টগুলো নিয়ন আলো ছড়িয়েই যাবে...

যাচ্ছেতাই - ০৫

আটকে রাখতে চেয়েছিল; সমাজের দোহাই দিয়ে। জিজ্ঞেস করলাম - আমার জন্য সমাজ, নাকি সমাজের জন্য আমি? উত্তর দেয়নি, দিতে হয়নি। হাতের ডান্ডা-বেড়ি কার তৈরি? মানুষের। সৃষ্টির সেরা জীব? বটে! সেই তো সেরার সেরা- বধ করে যে যত'কে। এমনকি নিজেকেও!

দ্বন্দ্ববিধাতা (বিভ্রাট)

রাতের সাথে পাল্লা দিয়ে ক্যাপটালের ভিড় কমতে থাকে। ফিরে যায় যে যার আস্তানায়, দু'ফোঁটা বিশ্রামের আশায়। কেও কেও ঘুমায়, স্বপ্নদেবীর ছলনায় বাকিরা রাতভর জেগে থাকে রক্তাক্ত চোখে, নেশাখোরের মত ভাবতে থাকে ঘোরে, আক্রোশ- সেতো হতাশারই বহি:প্রকাশ অবচেতন মনে প্রশ্ন জাগে ওদের- ভাগ্যবিধাতা কি তবে অস্তিত্বহীন? রাজকপাল যাদের, আমুদে রাত কাটায় পালঙ্কে; নরম বালিশে মাথা পেতে, সোসাইটি গার্লের বাহুডোরে। দেবী ওদের সাথে ছলনা করে না, ওরাই তো আরতি দেয় দেবীর! আর আত্মতৃপ্তির হাসি হেসে ভাবে- স্বর্গ তো তার বেডরুমেই। ভাগ্যবিধাতা সবি দেখেন! ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙে হতাশের, গালি দেয় ঈশ্বরকে; কোথায় তিনি? ভেতর থেকে জবাব আসে - ধৈর্য্য ধর!

আমি সভ্য হতে চাইনি

পাথরে পাথর ঠুকে যেদিন প্রথম নিজ হাতে আগুন জ্বেলেছে মানুষ, সেদিন হতেই রক্ত-ঘামের মূল্যমানে দু পাইয়ের আশায়-নেশায় হারিয়েছে হুশ। পাথর ছুড়েই বধ করে সব বণ্য প্রাণী পেটের ছুঁচো ক্ষান্ত করেই শান্ত হয়নি সেই প্রাণীকেই নিজ অধীনে আনল যবে অধিকার আর মালিকানাবোধ জাগল তবে। যাযাবর জাতি পশুপাল নিয়ে সারা পৃথিবী হন্নে হয়ে ছুটল আরো, গড়ল সমাজ, না আটকিয়ে ধরল কৃষি শস্য বুনে ভরল গোলা, পেল এবার স্থায়ী আবাস। (সংক্ষেপিত)

যাচ্ছেতাই - ০৪

হঠাৎ কেঁপে ওঠা ঠোঁট কামড়িয়ে ধরে ভাবি জ্বরের ঘোরেও, সত্যিই তুই কি গেয়ে যাবি- নিরালায়, সাদা পাতায় শব্দের গাঁথুনি গাঁথবি? পোড় খাওয়া, নবীন হাতে ব্যাথার ছবি আঁকবি? আলোর সাথে অন্ধকারের সন্ধি হয়ে থাকবি? রিক্ততা আর ক্লান্তি পথে শত ক্রোশ পথ ভাঙবি? নাকি স্বপ্নালু চোখে মরীচিকার ছায়া আঁকড়িয়ে থাকবি?

সার্থক মৃত্যু

অমৃতসুধা পান করব- জন্ম-জন্মান্তরের সাধ আমার। খুঁজে-খুঁজে মরেছি অকালে, জেগেও উঠেছি বারবার। পাইনি সে সুধার খোজ, অমরও হইনি বারবার বিভৎস মৃত্যু হানা দিয়েছে পথে তবুও নবজন্মে পথ ভেঙেছি আবছায়া ঐ মরীচিকারই পিছে। বিরতিহীন একটা জীবন চেয়েছিলাম পৃথিবীর প্রতিটা কোণায় ঢু মারব বলে, অথচ অজান্তে জীবনের বাঁকে-বাঁকে চোখ বুলানো হয়ে গেছে সর্বত্র। ব্যার্থ তো গেল কয়েক জনম- এবার একটা সার্থক মৃত্যু হোক!

হাহাকার

মাঝরাতের নিস্তব্ধ নিরবতা ভেঙে চৌরাস্তার গোল চত্বরে দাঁড়িয়ে বুক ফাটিয়ে চিতকার করে বলতে চাই- শান্তি দে বিধাতা; দু ফোঁটা অশ্রু দে। ভোগবিলাসী অস্থিরতার রোদে ফেটে চৌচির অন্তরাত্মা। হাজার ফিট শোকের গভীরতায়ও শুধুই হাহাকার, নেই; পানি নেই!!

বেখেয়ালে

আনমনে, তুলির আচড়ে কলমের খোচায়, কিপ্যাডে ক্যানভাস-খাতায়-ভার্চুয়ালে বিক্ষিপ্ত চিন্তারা রুপ পায় আকাঙ্ক্ষারা মুর্ত হয়ে ওঠে ক্ষোভ নিয়ে, আনন্দ বিকিয়ে। গুনগুনিয়ে চেনাসুর ভুলভাল আংশিক লিরিকে, আশা-নিরাশা প্রাণ পায় কান্নাগুলো ঝরে অঝোরে। বেখেয়ালে।

ছাই রঙের পাঞ্জাবি

তুই কি জানিস ছাই রঙা পাঞ্জাবিটা আমি এখনও ধুই নি, একবারও না! তোর চোখের কাজল লেপ্টে আছে বলে। শেষবার কেঁদেছিলি সেদিন; হ্যা, শেষবার-ই তো। কথা দিয়েছিস কাঁদবি না আর, আমিও বলেছিলাম; স্যরি রে, আমি পারিনি। জানি, তুই কথা রেখেছিস। জানিস, জন্মদিনে যে ঘড়িটা দিয়েছিলি ২৪ ঘন্টা হাতে থাকে আমার। ওটায় মিশে আছিস তুই, তোর ভুলোমনা ছোঁয়া। বন্ধুরা কতবার বলল- ওটা বদলে ফেল। অথচ আমি এখনো ব্যাটারিই বদলাইনি। ঘড়িতে কি আর সময় দেখি আমি? সেটাই বা ওরা বুঝবে ক্যাম্নে বল? আচ্ছা, সেদিন যদি কাঁদবিই তবে চোখে কাজল দিয়েছিলি কেন? চোখের জলে লেপ্টে যাওয়া কাজলটুকু পাঞ্জাবিটায় মোঁছার ছলে কেন ক্ষণে কেঁপে উঠেছিলি?

নষ্ট স্মৃতি

এইযে ডায়েরিটা দেখছ- কত সহজেই তো ছিড়ে ফেলা যায়! কিন্তু ডায়েরির পাতায়-পাতায় লাইনে-লাইনে যে আবেগ, যে হাসি-কান্না লেপ্টে আছে, ওগুলো? কাগুজে পাতা ছিড়ে ফেলা যায় বৃষ্টির পানিতে ভিজে যেতে পারে, হতে পারে তেলাপোকার খাদ্য মিশে যেতে পারে মাটিতেও কিন্তু ডায়েরির প্রতিটা স্মৃতি? দু'বছরের প্রতিদিনের ঘন্টা -মিনিট? প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসেবগুলো?? ওগুলো তো ইরেজারে মুছবে না, ফ্লুইড লাগালেই ঘুচবে না, গলবে না, পচবে না, নষ্ট হবে না। বরং প্রতিটা মুহূর্তে আমাকে খোঁচাবে, স্মৃতির প্রতিটা আঁচড় আমায় ভোগাবে, ওগুলো বেচে থাকবে! ডায়েরিটা পুড়িয়ে ফেললেও স্মৃতিগুলো টিকে থাকবে। ঐতিহাসিকের গবেষণার বিষয় না হলেও ওগুলো বেঁচে থাকবে আমার হৃদয়পটে। ডায়েরিটা তো কত সহযেই নষ্ট করা যায়; কিন্তু স্মৃতিগুলো??

অনুকাব্য- ছবিতা

জোছনা-আকাশ মেঘলা-রাতের সুখস্মৃতি সব তোমার থাক; হৃদয়গলে, কষ্টগুলো বৃষ্টি হয়ে তর্জনী আর বৃদ্ধাকাশে মুক্তি পাক।

অনুকাব্য- রবিবারী হাট

কোন এক শীতে মদির জোছনারাতে খুলে দেব জানালার কপাট। কনকনে ঠান্ডায় মাঝরাতে দুজনায় জুড়ে দেব স্বপ্নের রবিবারী হাট।